1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৮ অপরাহ্ন

মোবাইল ব‌্যাংকিংয়ে বাড়তি চার্জ নিয়ে প্রশ্ন ফরাসউদ্দিনের

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭
  • ২১৫ বার

প্রতিবেদক : মোবাইলে অর্থ লেনদেনের জন‌্য গ্রাহকের কাছ থেকে বেশি হারে টাকা নেওয়ার সমালোচনা করেছেন সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। মোবাইল ব্যাংকিংকে ‘মোবাইল তামাশা’ আখ‌্যা দিয়ে এখানে হস্তক্ষেপের জন‌্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ১০০ টাকা পাঠাতে লাগে ১ টাকা ৮৬ পয়সা। মতলবটা কত বদ আপনি চিন্তা করেন। ১ টাকা ৮৬ পয়সা মানেই ২ টাকা। ২ টাকা দিয়ে যিনি পাঠাবেন তারতো একাউন্ট নাই।”

বৃহস্পতিবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে এনবিআর আয়োজিত উপ কর কমিশনার সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব‌্য দেন ফরাসউদ্দিন।

নিজের অভিজ্ঞতা থেকে মোবাইল ব‌্যাংকিং সম্পর্কে তার এই ধারণা হয়েছে জানিয়ে ফরাসউদ্দিন বলেন, “ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাতে যদি ১০০ টাকায় মাত্র ৪০ পয়সা লাগে, তাহলে মোবাইল ট্রান্সফারে কেন ১ টাকা ৮৬ পয়সা বা ২ টাকা লাগবে?

“কিন্তু বিদেশিরা ধৈন্য ধৈন্য দিচ্ছে আমাদের মোবাইল ব্যাংকিং চলছে। এগুলো খুব ভালো করে চিন্তা-ভাবনা করে সরকারকে বুঝতে হবে। ওই জায়গায় হাত দিতে হবে।

“এটা দেখা দরকার, রেগুলেশন (নিয়ন্ত্রণ) হওয়া দরকার।”

গ্রাহকের ব‌্যাংক হিসাবের গোপণীয়তা রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, “প্রয়োজন না হলে কোনো গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব দেখা উচিত নয়। কেবল সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে দেখা যেতে পারে। এটা মানুষের আমানত, তা রক্ষা করতে হবে।

“ব্যাংক একাউন্ট হচ্ছে জনগণের আমানত। ব্যাংক হিসাব দেখার এখতিয়ার একেবারে না থাকা-ই ভালো, একদম ইমার্জেন্সি ছাড়া। ব্যাংকের ওপর হিসাবধারীর যে কনফিডেন্স তাকে নষ্ট করা যাবে না।”

এক লাখ টাকার বেশি লেনদেনের ক্ষেত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ দিয়ে কেন্দ্রীয় ব‌্যাংকের সাবেক এই গভর্নর বলেন, “১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটা প্রস্তাব আমরা সরকারকে দিয়েছিলাম, বলেছিলাম এক লাখ টাকার বেশি নগদ লেনদেন করতে হলে টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হোক। সরকার রাজি হয় নাই।”

‘মেইল অর্ডার বাণিজ‌্যকে’ করের আওতায় আনার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “মেইল অর্ডার বাণিজ্য বিত্তবান লোকেরা করে। ছাপোষা লোকেরা করে না। এখন দোকানে দোকানে ভিড় কম। কারণ মেইল অর্ডারে বেশি কেনা-বেচা হচ্ছে। এর উপরে ট‌্যাক্স মেকানিজম করার জন্য এনবিআরকে আমি গত ৫ বছর ধরে পরামর্শ দিচ্ছি। কিন্তু এই ক্ষমতা তাদের হাতে নাই।”

এটা করতে পারলে ট্যাক্স আদায় অনেক বেশি হবে মন্তব‌্য করে তিনি বলেন, “এটা খুব ন্যায়সঙ্গত। পৃথিবীর এমন কোনও দেশ নেই যেখানে মেইল অর্ডারের ওপর ট্যাক্স নেই।”

তামাকের ওপর কর নিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “বেশি দামের সিগারেটের ওপর অনেক কর অলরেডি আছে। কিন্তু ফ্যাশনেবল হচ্ছে এর ওপর কর বাড়িয়ে দেওয়া। কিন্তু ট্যাক্স আহরণ বাড়ানোর জন্য বেশি লাভ হবে না।

“তবে মানুষ অতিরিক্ত দাম বাড়ার কারণে যদি ধূমপান ছেড়ে দেয় তাহলে লাভ হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সমাজ আপনাকে ধন্য ধন্য দেবে।”

জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ক্ষেত্রে সরকারের নীতির সমালোচনা করে ফরাসউদ্দিন বলেন, “দেশের ৬৫ ভাগ মানুষ কেরোসিন ব্যবহার করে, ওইখানে কমাবেন বেশি করে। অকটেনের দাম কমে কিন্তু কেরোসিনের দাম কমে না। কি আশ্চর্য!

“অকটেন যারা কেনেন তাদের জন্য ১০ টাকা বাড়ালে কিচ্ছু যায় আসে না।”

আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশে জ্বালানি তেলের বেশি দামের কারণে যারা অতিরিক্ত মুনাফা করছে তাদের ধরার পরামর্শ দেন তিনি।

“দাম বাড়ানোর ফলে এবং আন্তর্জাতিকবাজারে দাম কমার ফলে হাজার হাজার কোটি টাকার মুনাফা এখন যারা করছেন তাদেরকে ধরেন। তাদেরকে বলেন, তোমরা যে এই অতিরিক্ত মুনাফা পাচ্ছো তার অর্ধেক আমাকে দাও। এনবিআরকে দাও।”

বিকল্প ব্যবস্থায় বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) ক্ষেত্রে কর কমিশনারদের সব সময় জেতার মানসিকতা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান ফরাসউদ্দিন।

“দেশপ্রেম শুধু আপনাদের নয়, ব্যবসায়ীদের মধ্যেও দেশপ্রেম কাজ করে,” বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, “রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর জন্য এনবিআরকে ব্যবসায়ীদের প্রতি হুঙ্কার পরিহার করে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে কেউ অসৎ বা অস্বচ্ছ থাকলে এনবিআর ফেডারেশনে এসে বলুন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। একই সঙ্গে আপনারাও স্বচ্ছ হোন।”

সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বলেন, এনবিআর সরকারের কয়েকটি লক্ষ্য পূরণে কাজ করছে।

“সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে জনমুখী ব্যবস্থাপনা চালু করেছে। তার আওতায় সরকার জনগণের ওপর করের বোঝা না বাড়িয়ে কর নেট সম্প্রসারণে উদ্যোগী। তারই ধারাবাহিকতায় করদাতার সংখ্যা দিন দিন বেড়ে এখন ২৭ লাখ ১৮ হাজারেরও বেশি হয়েছে।”

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog