প্রতিবেদক : নির্বাচনে না গেলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে- ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের এ ধরনের হুমকি কোনো কাজে আসবে না মন্তব্য করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবেন তার দল। রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে বীরোত্তম শহীদ জিয়া শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের উদ্যোগে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, “জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে আমাদের এই আন্দোলন, শুধু ক্ষমতায় যাওয়াটা আমাদের লক্ষ্য নয়। আমাদেরকে আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আমি স্পষ্টভাষায় বলছি, কিয়ামত পর্্যন্ত অপেক্ষা করব তবুও শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করব না।”
দলের এক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী নেতার প্রতি ইংগিত করে গয়েশ্বর বলেন, “আমাদের মাঝে কিছু কিছু আইনজীবী ফর্মুলা দেন, জেল হইব, জামিনও হইব আবার নির্বাচনও হবে। তাদের বলব, এই সব ফর্মুলা দেওয়া বন্ধ রাখেন।
“কিসের জেল, কি কারণে জেল? যাদের ফাঁসি হওয়ার কথা তারা রাষ্ট্র চালায়, আর আমরা কোনো অপরাধ না করে আমাদের নেত্রীর জেল দিব। এতই সহজ নাকী বাংলাদেশটা, আমরা কী সব মরে গেছি নাকী? আর কী জেল দিব, সারা দেশটাই তো একটা জেলখানা।”
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এক আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার আইনগত দিকে ব্যাখ্যা করে বলেন, “সরকার প্রধান ও তার মন্ত্রীরা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা নিয়ে নানা রকম কথা বলছেন। তারা বলছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার যদি শাস্তি হয়ে যায়, উনার তো আর নির্বাচন করা সম্ভব নয়- এই যে একটা ধারনা এটা সঠিক নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি পরিষ্কার করে বলছি, মিথ্যা মামলায় তার যদি সাজাও হয়, আগামী নির্বাচনে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারবেন। শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারবেন না, তিনি আমাদের দলের নেতৃত্ব দিতে পারবেন, জোটের নেতৃত্ব দিতে পারবেন।”
নির্বাচনে না গেলে নিবন্ধন বাতিল হবে- ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের এই বক্তব্যের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “ক্ষমতাসীনরা বলছে, নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাইব। যে লাইসেন্সে কাজ করতে পারমু না, সেই লাইসেন্স থাকলে কী না থাকলে কী? লাইসেন্স পকেটে নিয়ে ঘুরলাম, সেই লাইসেন্স ব্যবহার করতে পারলাম না, বছর বছর ট্যাক্স দিলাম, সিটি করপোরেশনকে ফিস দিলাম, সেই লাইসেন্স না রেখে ফালায় দিলে কী হবে আমাদের, কিছুই হবে না।
“আমরা বলতে চাই, নিবন্ধন বাতিল করলেন, ওসব জুজুর ভয় দেখাবেন না। তবে আপনাদের রাজনীতি যে জনগণের মন থেকে বাতিল হয়ে গেছে, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই। আর আপনি প্রতিপক্ষকে হাত-পা বেঁধে দিয়ে সাঁতারে প্রতিযোগিতা করবেন, এটা হবে না।”
সংগঠনের সভাপতি কাজী মুনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য খালেদা ইয়াসমীন, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।