প্রতিবেদক : ল্যাবরেটরি টেস্টের মাধ্যমে আদায় হওয়া রাজস্বের ৩৯ লাখ টাকা আত্মসাত মামলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) এক প্রকৌশলীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে কুমিল্লার একটি আদালত।
বুধবার কুমিল্লার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল তাকে এ দণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত হারুন-উর-রশিদ এলজিইডি কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন। এরপর থেকে তিনি সেখানে পরিকল্পনা শাখায় কর্মরত ছিলেন।
একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান।
তিনি বলেন, রায়ের সময় আসামি হারুন-উর-রশিদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
তাছাড়া মামলার আরেক আসামি মো. মাজহারুল আলম মারা যাওয়ায় বেসিক ব্যাংক কুমিল্লার সঞ্চয়ী হিসাবে জমা থাকা তার ১০ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার আদেশ দেয় আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০০১ সালে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের কুমিল্লা শাখায় জেলা এলজিইডি কার্যালয়ের নামে একটি হিসাব খোলা হয়। ‘মুদারাবা স্পেশাল ডিপোজিড’ হিসাবটিতে ২০১০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ল্যাবরেটরি টেস্টের মাধ্যমে পাওয়া রাজস্বের ৩৮ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৫ টাকা সরকারি খাতে জমা না করে নিজ স্বার্থে উত্তোলন করেন প্রকৌশলী হারুন-উর-রশিদ।
এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ২২ অগাস্ট হারুন-উর-রশিদ ও ল্যাবরেটরি টেকনিসিয়ান মো. মাজহারুল আলমকে আসামি করে দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
এরপর মামলাটি তদন্ত করেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সিলভিয়া ফেরদৌস। ২০১৪ সালের ১০ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় এবং ২০১৫ সালের ১৯ অগাস্ট থেকে মামলাটির কার্যক্রম শুরু হয় বলে জানান আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, দুদকের পক্ষে ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়।
“বুধবার রায়ে হারুন-উর-রশিদকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে আরও পাঁচ বছরসহ মোট ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।”
তদন্ত কর্মকর্তা সিলভিয়া ফেরদৌস বলেন, তদন্ত চলার সময় আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তিনি আদালত থেকে জামিনে ছিলেন।