জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। মঙ্গলবার রাজধানীর বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে এই দাবি জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
পরে আদালত বুধবার খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করে।
সকালে খালেদা জিয়া আদালতে পৌঁছলে আইনজীবী কাজল অনুসন্ধান রিপোর্ট ও এজাহার পড়ার মধ্য দিয়ে যুক্তিতর্কের শুনানি শুরু করেন। পরে তিনি মামলার ৩২ সাক্ষীর জবানবন্দি উপস্থাপন ও যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন।
এ সময় খালেদা জিয়ার পক্ষে সময় আবেদন করা হলে বিচারক ড. আখতারুজ্জামান তা নাকচ করে পূর্বনির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী কাল বুধবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য রাখেন।
গত ৫ ডিসেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজের অসমাপ্ত বক্তব্য উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়া। ওই দিনই আদালত জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজের বক্তব্য লিখিতভাবে দাখিল করতে এবং জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ১৯ ডিসম্বের দিন ধার্য করেন।
আদালত সূত্র জানায়, দুর্নীতির এ দুই মামলায় চলতি বছরের ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত।
১৯ অক্টোবর এ দুই মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করে আদালত।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট রাজধানীর তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করে দুদক।
আর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রাজধানীর রমনা থানায় অপর মামলাটি করা হয়।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়।
কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি। জমির মালিককে দেয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর-রশিদ।
এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।