বিএনপি অ্যাকশনে গেলেই আমরা রি-অ্যাকশনে যাবো বলে মন্তব্য করেছেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।

রাজধানীর ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চ প্রাঙ্গণে শ্রমিক কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলনের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে ৮ ফেব্রুয়ারি দেশে বিএনপি-জামায়াত কোন ধরনের বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করতে চাইলে কঠোর হাতে দমনের ঘোষণা দিয়েছেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে আপনারা শেখ হাসিনাকে উৎখাত করতে চেয়েছিলেন পারেনি আজও পারবেন না। যেখানেই কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হবে সেখানেই প্রতিহত করা হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির বিচারতো হবেই। আপনারা বলবেন দেশে আইনের শাসন চাই। আবার রায় আপনাদের বিরুদ্ধে গেলেই বলেন আইন মানিনা। তাই আপনাদের বলতে চাই অ্যাকশন দেখে রি-অ্যাকশন দিব।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় বিএনপি-জামায়াত। ২০১৪ সালে টানা ৯৪ দিন যখন অবরোধ করেছিল তখন আমরা মাঠে ছিলাম। এখনো আছি। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা করেছে এখন তারা এক হয়েছে। দেশে কোন প্রকার অস্থিতিশীল করা হলে প্রতিহত করা হবে। এর আগেও আমরা করেছি।’

নৌমন্ত্র বলেন, ‘বিএনপির দলে যে সমস্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে তাদেরকে কুলাঙ্গার মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আখ্যায়িত করতে চায়। যারা জয় বাংলা স্লোগান দেয় না, যারা বলে মুক্তিযুদ্ধের সময় এতো মানুষ মারা যায়নি তারা এদেশের মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না। তাদের বিরুদ্ধে ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

অনুষ্ঠানে জাতীয় সমাজতন্ত্রী দল (জাসদ)’র সাধারণ সম্পাদক সাংসদ শিরীন আখতার বলেন, আন্দোলনের নামে পেট্রোল বোমা মেরে শ্রমিকদের হত্যা করা গণহত্যার শামিল। এই গণহত্যার দায়ে বিএনপি নেত্রী খালেদার বিচার করা হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এর আগে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, বিএনপি এখন ‘উদুর পিন্দি বুদুর ঘাড়ে’ চাপানোর চেষ্টা করছে। তবে বাংলার মানুষ বুঝে গেছে যে খালেদা জিয়ার দুর্নীতিতে সাজা হতে পারে।

রবিবার বেলা ১১ টায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা বন্দরে সার্ভিস জেটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ওয়্যার হাউজ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, খালেদা জিয়ার এই মামলা হয়েছে কেয়ারটেকারের সময়। মামলা সেখান থেকে চলা শুরু করেছে, আজকে পর্যন্ত চলে আসছে। এখন মামলার রায় সম্পর্কে ওনারা নিজেরা যানেনা মামলার রায় কি হবে? যে সমস্ত বিজ্ঞ আইনজীবীরা তার সঙ্গে আছেন সেই আইনজীবীরা বলতে পারেন, মামলার মেরিট প্লাস সাক্ষী প্রমাণ এটা দেখে বুঝতেছেন যে তাদের এই মামলায় সাজা হবে। মানুষ বুঝে গেছে যে তার দুর্নীতিতে সাজা হতে পারে।

শাজাহান খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে আছে। দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। দেশ স্থিতীশীল অবস্থায় আছে বলেই আজ দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, পায়রা বন্দরের কাজ দ্রুত হচ্ছে। এই উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে। যদি আগামী দিনে ইনশাআল্লাহ শেখ হাসিনা নির্বাচিত হন এবং বাংলার মানুষ তাকে যদি আবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনেন তাহলে এই উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত থাকবে। আমি মনে করি, যে তারা (বিএনপি) হেরে যাবেন এই কারণেই তারা বলছেন খালেদা জিয়া ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবেন না বা নির্বাচন করতে দিবেন না।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান রবিবার বেলা ১১ টায় পায়রা বন্দর এলাকায় সার্ভিস জেটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ওয়্যার হাউজ উদ্বোধন করেন।

এছাড়া পায়রা বন্দর প্রশাসনিক ভবন, রাস্তা ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী পায়রা বন্দর কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন।

এ সময় সাবেক প্রতিমন্ত্রী পটুয়াখালী- ৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মাহবুবুর রহমান তালুকদার, পায়রা বন্দর চেয়ারম্যান কমডোর এম জাহাঙ্গীর আলম বিএন, জেলা পুলিশ সুপার মো.মঈনুল হাসান, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র এস এম রাকিবুল আহসান, কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার সহ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। মধ্যাহ্নভোজ শেষে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী পায়রা বন্দর ত্যাগ করেন।