অস্ত্র আইনের মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক আব্দুল মালেকের (৬৩) বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আদালত। একইসঙ্গে ৫, ৬, ৭ ও ৮ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) ঢাকা মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন। এই চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
মালেকের পক্ষে তার আইনজীবী আব্দুল মান্নান অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল এর বিরোধীতা করে চার্জ গঠনের প্রার্থনা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি একই আদালত মালেকের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন। গত ১১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১ এর এসআই মেহেদী হাসান চৌধুরী চার্জশিট দাখিল করেন।
অবৈধ অস্ত্র, জাল নোট ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার তুরাগ এলাকা থেকে গাড়িচালক মালেককে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
তখন তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি টাকার জাল নোট উদ্ধারের কথা জানানো হয়।
সে ঘটনায় র্যাব-১ এর পরিদর্শক (শহর ও যান) আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে দুটি মামলা করেন। এরপর মালেককে ১৪ দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
মালেককে গ্রেপ্তারের পরদিন দুদক জানায়, আগে থেকেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ‘সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের’ সঙ্গে জড়িত অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুদক। তাদের মধ্যে গাড়িচালক মালেকও রয়েছেন।
মালেককে গ্রেপ্তারের পর র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, অবৈধ অর্থে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছে স্বাস্থ্যের এই গাড়িচালক।
র্যাব কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, তুরাগের দক্ষিণ কামারপাড়ায় দুইটি সাততলা ভবন, একই এলাকায় একটি বিশাল ডেইরি ফার্ম, ধানমন্ডির হাতিরপুলে সাড়ে ৪ কাঠা জমিতে একটি নির্মাণাধীন ১০তলা ভবন ছাড়াও কলাবাগানসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৫টি ফ্ল্যাট রয়েছে মালেকের। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থও জমা আছে।
পরে মালেকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে তার অবৈধ সম্পদের তথ্য পায় দুদকও।
এরপর মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৬০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৯৩ লাখ ৫৩ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দুটি মামলা করে দুদক।