1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫২ অপরাহ্ন

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে সতর্ক করল জাতিসঙ্ঘ

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬
  • ২২৬ বার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের প্রধান জেইদ এক বিবৃতিতে মিয়ানমারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমার  ‘গা ছাড়া’ ভাব বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।তিনি আরো বলেন, “রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও জালিয়াতি অ্যাখ্যা দিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের প্রবেশের আবেদন ধারাবাহিক খারিজ করা হচ্ছে, যা নির্যাতিতদের জন্য অপমানস্বরূপ এবং আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চল পরিদর্শনে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের আবেদন ‘এখনও গৃহীত না হওয়ায়’ তীব্র হতাশাও ব্যক্ত করেন হাইকমিশনার।

বিরোধপূর্ণ ওই এলাকায় বিদেশি সাংবাদিক ও ত্রাণকর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, যা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের প্রধান জেইদ বলেছেন “কর্তৃপক্ষের যদি লুকানোর কিছু না থাকে, তাহলে কেন তারা সেখানে যেতে বাধা দিচ্ছে? বারবার আমাদের অনুমতি না দেওয়ায় আমাদের শঙ্কা, সেখানে ভয়াবহ কিছু হতে পারে।”

উল্লেখ্য, গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের তিনটি সীমান্ত পোস্টে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’হামলায় নয় সীমান্ত পুলিশ নিহত হওয়ার পর রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলাগুলোতে শুরু হয় সেনা অভিযান। এরপর থেকে সহিংসতায় বহু রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে, সহিংসতা থেকে বাঁচতে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে।

২০১২ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় শতাধিক মারা যাওয়ার পর এ দফাই এত বেশি রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু বাংলাদেশ সীমান্ত পানে ছুটছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

এবারের সেনা অভিযানে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ, ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া এবং বেসামরিকদের হত্যার অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকার তা অস্বীকার করেছে। বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার পর নিবন্ধিত শরণার্থীর বাইরেও ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে অনেক রোহিঙ্গা।

বিরোধপূর্ণ  রাখাইনে শান্তি ফেরাতে দেশটির সরকারকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে জমে থাকা দীর্ঘদিনের ক্ষোভ নিরসনে ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ জানান তিনি। তিনি বলেন “মিয়ানমার উত্তর রাখাইনের পরিস্থিতি যেভাবে সামলাচ্ছে তা খারাপ পরিস্থিতিকে কী করে নিকৃষ্ট অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যায় তার একটি উদাহরণ হতে পারে।”

“আমি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে পেছনে ফিরে দীর্ঘদিন ধরে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে ওই অঞ্চলে চালানো নিরাপত্তা অভিযানের প্রভাব বিবেচনা করতে অনুরোধ করছি।”

বিবৃতিতে অক্টোবরে সীমান্ত পোস্টে এবং পরে গত ১২ নভেম্বর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলারও তীব্র নিন্দা জানান জেইদ।

তিনি বলেন, “এগুলো কঠিন অপরাধ; এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও পরিকল্পনাকারীদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। কিন্তু যতদূর শুনেছি, ওই অপরাধের জন্য নিরাপত্তাবাহিনী পুরো সম্প্রদায়কে শাস্তি দিচ্ছে। তাদের প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ছে রোহিঙ্গা মুসলিমরা, এবং মাত্র দুই মাসের মধ্যে কম করে হলেও ২৭ হাজার রোহিঙ্গা প্রতিবেশি বাংলাদেশের সীমান্ত অভিমুখে পালিয়ে গেছে।”

নিরাপত্তা বাহিনীর এমন মনোভাবকে ‘ভুল’ বলেও অ্যাখ্যা দেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান।

তিনি বলেন, “দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, দুনিয়ায় এখন এমন অসংখ্য উদাহরণ বিদ্যমান যেখানে- সমস্যার মূল না খুঁজে নিরাপত্তার নামে সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যবহার চলছে। ফল হয়েছে ভয়ানক, অনেকেই বাস্তুহারা হয়েছেন, বিকাশ ঘটেছে সহিংস জঙ্গিবাদের। এবং শেষ পর্যন্ত সবাই পরাজিত হয়েছি।”

রোহিঙ্গা ঠেকাতে সতর্ক বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা

শান্তি ফেরাতে মিয়ানমারের রাজনীতিক ও সামরিক নেতারা এক হয়ে বিরোধপূর্ণ অঞ্চলটির সম্প্রদায়গুলোকে আশ্বস্ত করার কর্মসূচি নিতে পারে বলেও পরামর্শ দেন জেইদ।

“ক্ষোভের কথা শুনতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে তা মেটাতে কাজ করতে হবে; যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ মিলবে সেখানে নিরপেক্ষ তদন্তের ব্যবস্থা করে দুষ্কৃতকারীদের- তারা যেই হোক না কেন, বিচারের আওতায় আনতে হবে।”

‍মিয়ানমার সরকারকে এ বিষয়ে পরামর্শ দিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় প্রস্তুত আছে বলেও জানান হাইকমিশনার। পরিস্থিতির উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।

রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমার সরকারের তদন্ত কমিশন গঠন করার কথা উল্লেখ করে জেইদ নিরপেক্ষ পর‌্যবেক্ষদের শর্তহীনভাবে বিরোধপূর্ণ ওই অঞ্চল পরিদর্শনে অনুমতি দেয়ার ওপর জোর দেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog