প্রতিবেদক : ভর্তি পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ার পর ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য ও নীতিমালা জানতে চেয়ে ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। চিঠিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার্থী ভর্তির পদ্ধতি ও নীতিমালা, এ বছরের আসন সংখ্যাসহ অন্যান্য তথ্য বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ১২ জানুয়ারির মধ্যে সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।
গত ৯ জানুয়ারি ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে দুদকের পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী স্বাক্ষরিত এসব চিঠি পাঠানো হয়।
যেসব প্রতিষ্ঠানে দুদকের চিঠি পাঠানো হয়েছে সেগুলো হলো- মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, অগ্রণী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
এছাড়া রয়েছে ধানমণ্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়, সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হলিক্রস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মণিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এবং রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
বুধবার দুদক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ জানান, বিভিন্ন স্কুলে, বিশেষ করে রাজধানীর স্কুলগুলোতে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তারা পাচ্ছেন।
“অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা স্যামপ্লিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১৫টি স্কুল বাছাই করে তাদের কাছে ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য ও নীতিমালা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছি।”
স্কুলগুলোর ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পর্কিত নীতিমালা রয়েছে কি না, থাকলে সে নীতিমালা কতটুকু মানা হচ্ছে, অতিরিক্ত টাকা ডোনেশন দিয়ে ভর্তি করা হচ্ছে কি না ছাড়াও ভর্তি সংক্রান্ত নানা দুর্নীতি গভীরভাবে অনুসন্ধান করা হবে বলে দুদক চেয়ারম্যান।
“এ বিষয়ে তদন্ত জোরদার করতে দুদকের পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে।”
গত বছর সরকারি চাকুরেদের বেতন বাড়ার যুক্তি দেখিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বেসরকারি স্কুল ও কলেজগুলো শিক্ষার্থীদের বেতন ব্যাপক হারে বাড়ায়, যার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন অভিভাবকরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গতবছরের ৯ অগাস্ট বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বেতন ও টিউশন ফি বৃদ্ধি সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করে।
পরিপত্রে বলা হয়, অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের বেতন সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ বাড়াতে পারবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা) অনুমোদন পেলেই বাড়বে এই ফি।
প্রাথমিকভাবে ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হলেও ভবিষ্যতে অন্য স্কুল-কলেজগুলোকেও তদন্তের আওতায় আনা হবে বলে জানান ইকবাল মাহমুদ।
কমিশনের গত দুই বছরের কার্যক্রম ও ২০১৭ সালের পরিকল্পনা তুলে ধরতে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে দুদক সচিব আবু মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল এবং কমিশনার নাসিরুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।