ঢাকা: পুঁজিবাজারে ক্রমাগতভাবে কমছে সরকারি কোম্পানির অবদান। মন্দা বাজার ও দীর্ঘদিন ধরে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত না হওয়ায় বাজারে কোম্পানিগুলোর অবদান কমছে।

এ কারণে ২০১০ সালের পর থেকে লেনদেন ও বাজার মূলধনে ডিএসইতে সরকারি কোম্পানির অবদান ১০ শতাংশের ভেতরেই আটকে আছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোলনে বেসরকারি কোম্পানির পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে দ্রুত সরকারি কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির প্রয়োজন বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য মতে, বাজারে তালিকাভুক্ত ১৯টি সরকারি কোম্পানিতে জুলাই মাসে ডিএসইর মোট লেনদেনের পরিমাণ ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ। যা বাজার মূলধনের দিক থেকে অবদান ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ।

এর আগের মাসে (জুন) লেনদেনের দিক থেকে অবদান ছিলো ৭ শতাংশ ও মূলধনের দিক থেকে সাড়ে ৮ শতাংশ। তার আগে মে মাসে ডিএসইর লেনদেনে ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ ও এপ্রিলে লেনদেনে অবদান ছিল ১০ শতাংশ।

বাজারে তালিকাভুক্ত সরকারি কোম্পানিগুলো হলো-বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড (বিডি সার্ভিস), বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস কোম্পানি লি. (বিএসসিসিএল), বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি), ইস্টার্ন কেবলস (ই কেবলস), ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্ট (ইস্টার্ন লুব), আইবিসি, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (যমুনা অয়েল), মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড (মেঘনা পেট), ন্যাশনাল টিউব (এনটিএল টিউবস), পদ্মা অয়েল কোম্পানি (পদ্মা অয়েল), পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পাওয়ার গ্রিড), রেনউইক যজ্ঞেশ্বর অ্যান্ড কোম্পানি (রেনউইক জেএ), শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেড (শিয়ার এমইউজি), তিতাস গ্যাস, উসমানিয়া গ্লাস, ঝিলবাংলা সুগার মিলস লিমিটেড (জিলবাংলা), এটলাস বাংলাদেশ (এটলাস বিডি)।

এর মধ্যে সর্বশেষ ২০১২ সালে বাজারে তালিকাভুক্ত হয় বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু আহমেদ এ বিষয়ে  বলেন, সরকারি কোম্পানিগুলো বাজারে আসলে কারসাজি চক্রের দাপট কমে আসবে। বিনিয়োগকারীরা লোকসান থেকে রক্ষা পাবেন। বাজারও চাঙা হবে।

ডিএসইর সাবেক পরিচালক আহমেদ রশিদ লালী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো কোনো উদ্যোগ না থাকায় সরকারি প্রতিষ্ঠানের অবদান কমেছে। তিনি বলেন, সরকারি কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হলে বাজার স্থিতিশীলতায় বড় ধরনের অবদান রাখবে। পুঁজিবাজারের প্রতি সরকারের দায়িত্ব বাড়বে। পাশাপাশি বাজারে জবাবদিহিতাও বাড়বে। লোকসানে থাকা কোম্পানি মুনাফায় ফিরবে। যার সুফল পাবেন বিনিয়োগকারীরা।

জানা গেছে, পুঁজিবাজারে ২০১০ সালে ধসের পরপরই বাজারে সরকারি কোম্পানির তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নেয় সরকার। এরপর গত ৬ বছরে মোট তিন দফা সময় বেধে দেওয়া হয়। এর মধ্যে দু’বার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও হস্তক্ষেপ করেন। এরপরও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা কোম্পানিগুলোর শেয়ার কবে নাগাদ বাজারে আসবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।