প্রতিবেদক : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যাকাণ্ডের মধ্যে পাশের উপজেলার নিখোঁজ চারজনের বাকি দুজনও ফিরে এসেছেন।
তারা হলেন- সাদুল্লাপুরের নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাইদুল ইসলাম প্রিন্স এবং নলডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শফিউল ইসলাম শাপলা।
প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তাদের পাশাপাশি নিখোঁজ হয়েছিলেন সাদুল্লাপুর উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও দামোদরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মনোয়ারুল হাসান জিম মণ্ডল এবং দামোদরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদেক।
মনোয়ার ও সাদেক গত বৃহস্পতিবার ভোরে বাড়ি ফিরে আসেন। তবে কারা তাদের ধরে নিয়েছিল, সে বিষয়ে কিছু ‘জানেন না’ বলে জানিয়েছেন তারা।
১১ দিন পর শনিবার ভোরে ফিরে আসেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রিন্স ও যুবদল নেতা শাপলা।
প্রিন্সের বড় ভাই নলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম নয়ন সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার রাতে এই দুজন ছাড়া পান। “রাত দেড়টার দিকে প্রিন্স মোবাইলে ফোন দিয়ে জানায়, সে ও শাপলা দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার খোলাহাটির ট্যাক্সের হাট এলাকায় অবস্থান করছে। এরপর মাইক্রোবাস নিয়ে গিয়ে তাদের বাড়ি আনি।”
মনোয়ার ও সাদেককে যে প্রক্রিয়ায় ছাড়া হয়েছিল, প্রিন্সের বর্ণনাও ঠিক তেমনি। তিনিও বলতে পারেননি, কারা তাদের ধরে নিয়েছিল। প্রিন্স বলেন, “কয়েকজন লোক রাত আনুমানিক ১টার দিকে আমাদের চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে করে একটি ফাঁকা জায়গায় নামিয়ে রেখে যায়। তারা আমাদের মোটর সাইকেল ফেরত দেয়।”
মোটর সাইকেলে করে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার খোলাহাটির ট্যাক্সের হাট এলাকায় গিয়ে বাড়িতে ফোন করেন প্রিন্স।
তাদের কোনো জিনিসপত্রও খোয়া যায়নি। শাপলা বলেন, তাদের কোথায় রাখা হয়েছিল, তা তারা বুঝতে পারেননি।
তিনি বলেন, তাদের আলাদা জায়গায় সব সময় চোখ বেঁধে রাখা হত। এর মধ্যে একদিন তিনি অসুস্থ হলে চিকিৎসক এনে চিকিৎসাও করানো হয়। সাদুল্লাপুর থানার ওসি ফরহাদ ইমরুল কায়েস জানান, “তাদের ফিরে আসার কথা শুনেছি। তবে কীভাবে ফিরে এলেন তা জানতে পারিনি।”
মনোয়ারুল হাসান জিম মণ্ডল ও সাদেকুল ইসলাম সাদেক মনোয়ারুল হাসান জিম মণ্ডল ও সাদেকুল ইসলাম সাদেক
গত ৯ জানুয়ারি রাতে মনোয়ার ও সাদেককে তুলে নেওয়ার পরদিন সকালে প্রিন্স ও শাপলাকে তুলে নেওয়া হয়েছিল।
ইউপি চেয়ারম্যান নয়ন তখন জানিয়েছিলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে কয়েকজন নলডাঙ্গা রেলগেইট এলাকা থেকে মোটর সাইকেলসহ তুলে নেয় তার ভাই প্রিন্সকে।
প্রায় একই সময়ে নলডাঙ্গার কাচারী বাজার এলাকায় সাদা পোশাকের কয়েকজন ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের পরিচয় দিয়ে শাপলাকে ধরে নেয় বলে তার বাবা আমিনুল ইসলাম জানিয়েছিলেন।
তবে কোনো বাহিনী এদের ধরে নেওয়ার কথা স্বীকার করেনি।
এই চার নেতা নিখোঁজ হওয়ার পর সাদুল্লাপুর থানায় অভিযোগ করেন তাদের স্বজনরা। তাদের সন্ধানের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, হরতাল-অবরোধ, মানববন্ধন, থানা ঘেরাও কর্মসূচিও পালন করেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।