প্রতিবেদক : অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনসহ ১২ দফা দাবিতে দক্ষিণ-পশ্চিমের ২১ জেলায় চলমান পণ্য পরিবহন ধর্মঘট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকের পর প্রতাহারের ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রায় চার ঘণ্টা বৈঠক শেষে পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদের ডাকা এ ধর্মঘট প্রত্যাহারের কথা জানান শ্রমিক নেতা নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।
বৈঠক শেষে জাতীয় শ্রমিক লীগের এই সহ সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, “সমঝোতার ভিত্তিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।”
সড়ক-মহাসড়কে পুলিশের চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধ এবং অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞাসহ ১২টি দাবিতে সোমবার ভোর থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় ধর্মঘট শুরু করে পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদ।
এরপর মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা বিভাগ, বৃহত্তর ফরিদপুর ও বরিশালসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই বৈঠক শুরু হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পণ্য-পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের এই বৈঠকে নৌমন্ত্রী ছাড়াও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর নৌমন্ত্রী শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, “ট্রাক ও কর্ভাডভ্যানের ফিটনেস থেকে শুরু করে ড্রাইভিং লাইন্সেসসহ অন্যান্য কার্যাদি দ্রুত সম্পন্ন করতে বিআরটিএর চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
“টোলের নামে মহাসড়কে টার্মিনালের বাইরে যারা টাকা নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে ট্রাক ও কভার্ড ভ্যানসহ পণ্য পরিবহন করা বিভিন্ন যান থেকে চাঁদা তোলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
এছাড়া মহাসড়কগুলোতে অতিরিক্ত পণ্যবাহী পরিবহন কোনো ভাবেই চলতে দেওয়া হবে না বলেও জানান মন্ত্রী।
দুই মন্ত্রীর আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে বৈঠকে শেষে পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারাও সাংবাদিকদের বলেন।
তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে – পরিবহনে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই না করতে প্রেসনোট জারি, পণ্যবাহী যানবাহনের বাম্পার অপসারণের সিদ্ধান্ত বাতিল, ফেরিঘাটে চাঁদাবাজি ও অনিয়ম বন্ধ, কাগজপত্র পরীক্ষার নামে হয়রানি বন্ধ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ, ব্রিজের টোল কমানো, অপ্রয়োজনীয় স্পিড ব্রেকার অপসারণ, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, জ্বালানি তেলের দাম কমানো এবং ভারতের পেট্রোপোল বন্দরে চালকদের নির্যাতন বন্ধ।