প্রতিবেদক : রামপালবিরোধী হরতালের সময় এটিএন নিউজের সাংবাদিক এহসান বিন দিদার ও ক্যামেরাপারসন আব্দুল আলীমকে পুলিশের মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন সাংবাদিকরা।
এর সঙ্গে ওই ঘটনার সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যও প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার সকাল ১১টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হয়ে তারা মুখে কালো কাপড় বেঁধে বিক্ষোভ দেখান।
বিক্ষোভ পরবর্তীতে সমাবেশে বিএফইউজে সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, “হরতালের খবর সংগ্রহের দায়িত্ব পালনকালে দুই সাংবাদিক পুলিশের হামলায় আহত হবার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এই ঘটনার পর পুলিশ তদন্ত কমিটি করেছে। প্রয়োজনে সেখানে ওইদিন যারা প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন তাদেরও বক্তব্য নিন।
“ওই ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি প্রত্যাহারের দাবি করছি। তার এই ধরনের বক্তব্য পুলিশের ওই সদস্যদের আরো দুর্বিনীত করবে।”
রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার হরতাল চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
ওই ঘটনার সংবাদ সংগ্রহে থাকা এটিএন নিউজের প্রতিবেদক এহসান বিন দিদার ও ক্যামেরা পারসন আব্দুল আলীমকে দুপুরের দিকে শাহবাগ থানার ভেতরে নিয়ে মারধর করে পুলিশ। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “পুলিশ সাংবাদিকদের মারধর করে না, মাঝেমধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়।”
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, “সাংবাদিকদের উপর হামলার ছবি ও ভিডিও প্রচার হয়েছে। কারা হামলা করেছে সেটি জানা গেছে। দোষীদের বিচার দাবি করছি।”
এটিএন নিউজের সাংবাদিক মুন্নী সাহা বলেন, “সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে পুলিশ তাদের সময়ে অসময়ে পিটিয়ে আহত করবে ও পরে পদোন্নতিও পাবে এটা কেমন কথা। তারা সাময়িক বরখাস্তের নামে জামাই আদরে থাকবে।
“এমন হলে বলুন, সাংবাদিকরা তাদের মাইক্রোফোন, বুম, কলম এক জায়গায় রেখে দরকার হলে আরেক জায়গায় দাঁড়াক। আপনারা তাদের উপর নির্যাতন চালিয়ে পুরস্কার ও পদোন্নতি নিন।”
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী বলেন, পুলিশ সপ্তাহে পুলিশকে জনবান্ধব হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুলিশ দুই সাংবাদিক পিটিয়ে কি শিক্ষা নিল সেটা অবশ্যই দেখা গেল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় যা বলেছেন, সেটা ‘নির্মম রসিকতা’ ছাড়া কিছুই না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার আলম বলেন, “যারা সাংবাদিকদের উপর হামলা করেছে তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অবিলম্বে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”