প্রতিবেদক: রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের মেধাবী ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশার (১৪) হত্যাকারী বৈশাখী টেইলার্স এর কাটিং মাষ্টার ওবায়দুলের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ঢাকা মহানগর অষ্টম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবুল কাশেম এ হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন করেন। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে রিশা হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হলো।
মামলার একমাত্র আসামি ওবায়দুলকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেন।
তিনি বলেন, রিশা হত্যা মামলাটি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়েছে। মামলায় ওবায়দুলকে একমাত্র আসামি করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। মামলায় অন্য কারো সম্পৃক্ততা পাওয়ায় যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৪ আগষ্ট রাজধানীর উইলস ফাওয়ার স্কুলের সামনের ফুটওভার ব্রীজের কাছে রিশাকে ছুরিকাঘাত করে ওবায়দুল। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৮ আগষ্ট রবিবার সে মারা যায়।
রিশাকে ছুরিকাঘাত করার পরদিন তার মা তানিয়া হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। রিশার মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
অন্যদিকে রিশার মৃত্যুতে ওবায়দুলকে গ্রেপ্তার ও বিচারে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৩১ আগস্ট ভোরে নীলফামারী থেকে ওবায়দুলকে গ্রেপ্তার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
পরে ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা সিএমএম আদালতে ওবায়দুলকে হাজির করে রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেন ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকা মহানগর হাকিম দেলোয়ার হোসেন ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শেষে ৫ সেপ্টেম্বর ওবায়দুল রিশাকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে ওবায়দুল বলেন, রিশাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল সে। কিন্তু রিশা তা প্রত্যাখ্যান করায় তাকে ছুরিকাঘাত করে ওবায়দুল।
জবানবন্দি শেষে ওবায়দুলকে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
মামলার অভিযোগ বলা হয়, ৫/৬ মাস আগে রিশা ও তার মা তানিয়া ইস্টার্ন মল্লিকা মার্কেটে বৈশাখী টেইলার্সে কাপড় সেলাই করাতে যান। এ সময় তার মা ওই দোকানের রসিদের রিসিভ কপিতে ফোন নম্বর দিয়ে আসেন। ওই টেইলার্সের কর্মচারী ওবায়দুল রিসিভ কপি থেকে ফোন নম্বর নিয়ে রিশাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করত। রিশার মা এ বিষয়ে ওবায়দুলকে শাসান বলেও জানা যায়।
গত ২৪ আগস্ট রিশা ও তার বন্ধু মুনতারিফ রহমান রাফি পরীক্ষা শেষে কাকরাইল ওভারব্রিজ পার হওয়ার সময় ওবায়দুল রিশাকে আবারো প্রেমের প্রস্তাব দেয়। রিশা তা প্রত্যাখ্যান করলে ওবায়দুল তাকে ছুরিকাঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় রিশাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ আগস্ট রিশা মারা যায়।