আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এখন তিক্ত। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চীন সফরের জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়পত্র দেয়নি।
ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসহ বিভিন্ন রাজ্যের মন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীদের বিদেশ সফরে যেতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র নিতে হয়। চীন থেকে মমতাকে আমন্ত্রণ জানানোর পর প্রথম পর্যায়ে কেন্দ্র মমতাকে ছাড়পত্র দেওয়ার সবুজ সংকেত দেয়।
সম্প্রতি তিব্বতের ধর্মগুরু দালাই লামার ভারতের অরুণাচল প্রদেশ সফরকে ঘিরে চীনের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে। তা ছাড়া চীন অরুণাচল প্রদেশের ছয়টি জায়গার নাম নতুন করে দেওয়ায় ক্রুদ্ধ হয় ভারত। এসব ঘটনার পর ভারত সরকার মমতাকে চীন সফরের ছাড়পত্র দেয়নি। যদিও মমতাকে সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল চীন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র উদ্ধৃত করে আজ রোববার কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে বলা হয়, ‘চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের বাতাবরণে প্রধানমন্ত্রী চাইছেন না, কোনো মন্ত্রী এই মুহূর্তে চীন সফরে যান।’
আগামী মাসে চীনে অনুষ্ঠেয় ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ শীর্ষক মেগা প্রকল্পের সম্মেলনে যাওয়ারও আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত সরকার। আবার ১৪ মে নতুন দিল্লিতে ভারত-রাশিয়া-চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও আসছেন না চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মমতাকে প্রাথমিকভাবে কুনমিং সফরের আমন্ত্রণ জানানো হলে তাতে রাজি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। কিন্তু অরুণাচল প্রদেশে দালাই লামার সফরের পর রীতিমতো হুমকি দিতে শুরু করে চীন। এ ছাড়া অরুণাচলের ছয়টি এলাকার নতুন নামকরণ, ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’-এর মাধ্যমে পাকিস্তানের অধিকৃত কাশ্মীরে আর্থিক করিডর তৈরির মতো একের পর এক ঘটনা ঘটায় ক্রুদ্ধ ভারত সরকার।
ভারতের গণমাধ্যমের খবরে আরও বলা হয়, কেন্দ্রের আশঙ্কা ছিল টালমাটাল এই দ্বিপক্ষীয় পরিস্থিতিতে মমতাকে নিয়ে গিয়ে কোনো ফাঁদে ফেলতে পারে চীন। সীমান্তবর্তী রাজ্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্ব যথেষ্ট। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও মনে করেন, এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মমতা নিজেও এ সম্পর্কে সচেতন। তাই এই ছাড়পত্র না পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রবিরোধী কোনো রাজনীতি করতে চাননি মমতা।