ভয়ঙ্কর রূপ পাওয়া করোনাভাইরাস মহামারীতে দেশে এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ১১ হাজারের ঘরও ছাড়িয়ে গেল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সাড়ে ৩৬ হাজার নমুন পরীক্ষা করে রেকর্ড ১১ হাজার ৫২৫ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৬৩ জনের।
নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩১ শতাংশ পেরিয়ে গেছে, যা গত বছরের অগাস্টের পর সর্বোচ্চ।
ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে গত ৩০ জুন সারা দেশে লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি হয়। তার আগের দিন ৩০ জুন রেকর্ড ৮৮২২ জন রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল। সোমবার তা ছাড়িয়ে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছায় ৯ হাজার ৯৬৪ জনে। একদিন বাদেই তা প্রথমবারের মত দশ হাজার ছাড়িয়ে গেল।
দৈনিক শনাক্তের সঙ্গে মৃত্যুতেও রেকর্ড হয়েছিল সোমবার, সারা দেশে ১৬৪ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মঙ্গলবার সেই সংখ্যা কমেছে শুধু একজন।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৯ লাখ ৬৬ হাজার ৪০৬ জনে। তাদের মধ্যে ১৫ হাজার ৩৯২ জনের প্রাণ গেছে করোনাভাইরাসে।
গত এক দিনে কেবল ঢাকা বিভাগেই ৫০৯৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের প্রায় ৪৪ শতাংশের বেশি। চট্টগ্রাম বিভাগে এক দিনে শনাক্ত রোগী দেড় হাজার ছাড়িয়েছে, খুলনায় ছাড়িয়েছে ১৮ শ।
আর যে ১৬৩ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ৪৬ জনই ছিলেন খুলনা বিভাগের বাসিন্দা। ঢাকা বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের।
গত এক দিনে খুলনা বিভাগে যে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ১৭ জনই ছিলেন কুষ্টিয়া জেলার। আর ঢাকা বিভাগে মারা যাওয়া ৪৫ জনের মধ্যে ১৬ জনই ছিলেন ঢাকা জেলার বাসিন্দা।
এছাড়া চট্গ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন করে মোট ৪৮ জন, রংপুর বিভাগে ১১ জন, বরিশাল বিভাগে ৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ জন এবং সিলেট বিভাগে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।
মৃত ১৬৪ জনের মধ্যে ৯১ জনেরই বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ২৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ২৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ৫ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
তাদের ৯৮ জন ছিলেন পুরুষ, ৬৫ জন ছিলেন নারী। ১২৬ জন সরকারি হাসপাতালে, ২৯ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ৫ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ৩ জনকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নেওয়া হয় বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা ৯ লাখ পেরিয়ে যায় গত ২৯ জুন।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ৪ জুলাই তা ১৫ হাজার ছাড়ায়।
বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৮ কোটি ৪২ লাখ ছাড়িয়েছে। আর ৩৯ লাখ ৮৬ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।